আমরা কলকাতায় / বাংলায় বসন্ত শুরু করি রবি ঠাকুরের “খোল দ্বার খোল, লাগলো যে দোল” দিয়ে। এই গান ছাড়া বাকি কিছুই বোঝা যায়না বসন্তের। ও না, যায়। প্রচণ্ড গরম পড়ে আর আমি বাড়ির থেকে বেরনো বন্ধ করে দিই। হা হা। সেটা কিন্তু এখানে হয় না। জার্মানিতে, প্রতি ঋতু খুব ভালো করে বোঝা যায়। শরৎ / হেমন্তে গাছের পাতার রং পালটে যায়, শীতে সেই পাতা ঝরে পড়ে যায়। বেশ বরফ পড়ে, তার সাথে হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডা। মাগডেবর্গে -১০, -১২ অবধি যায়।
বসন্তে বেশ পাখিরা গান গায়। সেই গানেই আমার ঘুম ভাঙ্গে। ছবি তোলার পরে দেখি, বেশ নতুন পাতা গজিয়েছে। এই অনুভূতি টা আমার জীবনে নতুন। আগে দেখিনি তো, তাই প্রথম বার বেশ মজা পেলাম। বেরিয়ে পড়লাম ক্যামেরা হাতে, শহর টা কে নতুন করে দেখতে।
এ দেশের সরকার বসন্তে, এই শহরগুলোকে বেশ বড়সড় একটা বাগান বানিয়ে দেয়। রাস্তার ধারে টুলিপের ফুলে ভরতি। এই ব্লগ পোস্ট লেখার সময় জানতে পারলাম টুলিপ কে বাংলায় “ঘণ্টাকর্ণ” বলা হয়। অন্তত গুগল তাই বলল। আমি টুলিপ-ই বলব। ঘণ্টাকর্ণ টা বেশি হয়ে যাবে। যাক গে। শুধু টুলিপ না, অনেক রকম ফুল দিয়ে রাস্তা ঘাট সাজানো হয়। সব জায়গায় ফুল – কলেজের মধ্যে, রাস্তার ধারে, বাগানে, বাজারে, পারকিং করতে গিয়েও ফুল দেখা যায়। বসন্তের প্রতি মুহূর্তে এখানে রঙের বিস্ফোরণ হয়। লাল, নীল, হলুদ, গোলাপী, সাদা, আরও অনেক রং। বাংলার পলাশ আর এখানে টুলিপ।
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
হোলস্বেগ বলে একটা জায়গা আছে। রাস্তার দুই ধারে সারি সারি জাপানি চেরি ব্লসসম গাছে ভর্তি। জাপানি চেরি ব্লসসমকে “সাকুরা” বলা হয়। বলা হয়, এই গাছ মানুষের জীবনে মানসিক শান্তি আনে। যখন পূর্ব জার্মানি আর পশ্চিম জার্মানির পুনর্মিলন হয়, তখন সাধারন লোকেরা টাকা জমিয়ে এই গাছ কেনে। তার পর এই গাছ বাকি দেশে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
আমিও সুযোগ বুঝে চলে গেলাম আমার কিছু বন্ধুদের কে নিয়ে।
.
.
.
.
.
.
.
.
.